শিশুর ডায়রিয়া হলে কিভাবে বুঝবেন ? শিশুর ডায়রিয় হলে আপনার করণীয় কী?
শিশুর ডায়রিয়া হলে বুঝবেন কীভাবে?
প্রতিদিন কারও কমপক্ষে তিনবার বা এর বেশি পাতলা পায়খানা হলে এবং মলের চেয়ে পানির পরিমাণ অনেক বেশি থাকলে তাকে ডয়রিয়া বলা হয়।
স্বাভাবিক নরম পায়খানা যদি তিন বা তার বেশি হয়, তা কিন্তু ডযায়রিয়া নয়। যেসব শিশু বুকের দুধ পান করে, তারও বারবার নরম পায়খানা করে, সেটিও ডায়রিয়া নয়। পাতলা পায়খানার সাথে রক্ত মিশ্রিত থকলে সেটা আমাশয়।
শীতকালে শিশুর ডায়রিয়া হওয়ার প্রধান কারণ রোটা ভাইরাস। এ ছাড়া অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমনে সর্দি-কাশির পাশাপাশি শিশুর ডায়রিয়াও হতে পারে।
ডায়রিয়ার কারণে সৃষ্ট তীব্র পানিশূন্যতা এবং রক্তে লবণ -পানির তারতম্য অনেক বাচ্চার মৃত্যুর কারণ হয়। ডায়রিয়ার আরেক বিপদ হােইনেট্রিমিয়া। ভুলভাবে স্যালাইন খাওয়ানোর কারণে অনেক শিশুর রক্তে মাত্রাতিরিক্ত সোডিয়াম বেড়ে যায়, একেই বরে হাইপোরনেট্রিমিয়া। এর জন্য অনেক শিশুকে আইসিইউতে রেখেও চিকিৎসা দিতে হয়ে।
ডায়রিয়া হলে করণীয় কী?
বাচ্চার যেন পানিশূন্যতা না হয়, সেদিকে সবার আগে খেয়াল রাখতে হবে । এ জন্য বাচ্চাকে বারবার স্যালাইন খাওয়ানো প্রয়োজন। তবে স্যালাইন যেন সঠিকভাবে বানানো হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। স্যালােইনের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশনা মেনে স্যালাইন তৈরী করতে হবে।
অন্যথায় শরীরে লবণ-পানির তারতম্য ঘটে আরও ক্ষতির কারণ হতে পারে। এই স্যালাই ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত ভালো থাকে।
ঘরে স্যালাইনের প্যাকেট না থাকলে স্যালাইন প্রস্তুত করে নেওয়া যেতে পারে। ৬ চামচ চিনি ও আধা চামচ লবণ ১ লিটার বিশুদ্ধ পানিতে ভালোভাবে গুলে নিলেই তৈরী হয়ে যাবে স্যালাইন।
স্যালাইন তৈরীর সময় উপাদানে কম-বেশি করা যাবে না। চিনির পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে ডায়রিয়া বেড়ে যেতে পারে । আবার অতিরিক্ত লবণ শিশুর মৃত্যুর কারণও হতে পারে। ঘরে তৈরী স্যালােইন ছয় ঘণ্টার মধ্যেই পান করতে হবে।
স্যালাইনের পাশাপাশি যেসব বাচ্চার বুকের দুধ খায়, তাদের সেটা চালিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি অন্য তরল ও স্বাভাবিক খাবারও চালিয়ে যেতে হবে।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক- জাতীয় দেওয়া উচিত নয়। যদি শিশুর মধ্যে পানি শূন্যতার লক্ষণ যেমন চোখ তেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া, শরীরের চামড়া ঢিলে হয়ে যাওয়া, অবসন্ন হয়ে পড়া ই্যাদির সঙ্গে অত্যাধিক বমি, জ্বরের তীব্রতা বাড়তে থাকে এবং পায়খানার সঙ্গে রক্ত আসে।
তবে শিশুকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।
0 Comments