এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের রাতে কোনো কাজ নেই- কিন্তু তবুও জেগে থাকেন। অনেকে আবার ঘুমানোর অনেক চেষ্ঠা করেও ঘুমাতে পারেন না। রাতের ঘুম নিয়ে যারা ভুগছেন তাদের জন্য রইল আমাদের সাতটি পারামর্শ। আশা করা যায় এই সাতটি নিয়ম মানলে রাতে আপনাদের ১০০% গভির ঘুম হবে।
উচ্চ শব্দ বন্ধ করুন, নাহলে হোয়াইট নয়েজ চালান?
পাশের বাসা বা ওপর তলার কেই ধুপধাপ আওয়াজ করতে পারে, কেউ কেউ গান শুনতে পারে উচ্চ শব্দে। আবার রাস্তার পাশে বাসা হলে হর্নের আওয়াজও বারোটা বাজাতে পারে আপনার ঘুমের এসব ক্ষেত্রে ঘরের ধরজা-জানালা বন্ধ রাখা ছাড়া উপায় থাকে না। এর পরও শব্দ কানে এলে হোয়াইট নয়েজ ( এক ধরনের শো শো শব্দ, অনেকটা ফ্যানের বাতাসের মতো) চালিয়েও ঘুমিয়ে যেতে পারেন যেভাবেই হোক শব্দ থেকে দুরে থাকতে হবে।
২০২০ সালের এক গবেষনায় দেখা গেছে, হোয়াইট নয়েজ চালিয়ে ঘুমানের কারণে কিছু মানুষের ঘুমের উন্নতি হয়েছে।
একটু হাটা-চলা করতে হবে?
ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুয়ে থেকেও যদি ঘুম না আসে, তাহলে বিছানা থেকে উঠে পড়ুন। বারান্দায় গিয়ে একটু হাটুন প্রয়োজনে এক রুম থে েঅন্য রুমে হেটে আসুন কিছুক্ষণ হেটে এসে আবার শুয়ে পড়ুন। এবার সম্ভবত আপনার ঘুম আসবে। বাসায় সিড়ি থাকলে একটু সিড়ি দিয়ে হেটে নিচে নামতে পারেন। ব্যায়ামের পাশাপাশি ঘগুমেরও সাহায্য হবে।
বারবার সময় দেখা থেকে বিরত থাকুন?
রাতে ঘুম না এলে অনেকে বারবার ঘড়ি দেখেন। হয়তো রাত তিনটা বেজে গেছে, কিন্তু আপনি এখনো ঘুমাতে পারেননি। এ ক্ষেত্রে মনে হবে, হায় হায় আর মাত্র চার পাচ ঘণ্টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠে কাজে যেতে হবে। হয়তো সময় দেখে তারাতারি ঘুমানোর চেষ্ঠা করবেন কিন্তু তাতে ঘুম আসবে না বরং ঘুম আপনাকে ছেড়ে পালাবে। কারণ, ঘুম না হওয়ার কারণে আপনার মধ্যে উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তা কাজ করছে।
যত বেশি ঘড়ি দেখবেন, দুশ্চিন্তা তত বাড়বে। ২০১৮ সালের এক গবেষনায় দেখা গেছে, দুশ্চিন্তা ও ঘুম পরষ্পরবিরোধী। যাদের দুশ্চিন্তা বেশি, তাদের ঘুমে সমস্যা হয়। আর যাদের ঘুমে সমস্যা হয়, তাদের জীবনে আছে দুশ্চিন্তা।
স্ক্রিন এড়িয়ে চলতে হবে?আনেকে রাতে ঘুমানেরার আগে নিয়মিত মুঠোফোন ব্যভহার কনে। হয়তো ঘুমিযে ঘুমিয়ে একটু লিস টিকটক বা শট ভিডিও দেখেন। দেখে হয়তো ভালোই লাগে, কিন্তু ঘুমের পথ বন্ধ হয়ে যায়। সম্মার্টফোন এবং অন্যান্য ইলেকট্রিক স্ক্রিন থেকে নীল আলো নির্গত হয়।
এই নীল আলোর কারণে আমাদের শরীরে মেলাটোনিন উৎপাদন কমে যায়। মেলাটোনিন হলো একটা হরমোন, যা আমাদের ঘুমের সার্কিডিয়ান ছন্দ ও ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কেউ কেউ ভাবতে পারেন, নীল আলো থকে বাচতে তো আপনি ছশমা ব্যবহার করনছেন, কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু কাচের চশমা ও এ জন্য যথেষ্ট নয়। তাছাড়া চশমা কতটা কার্যকর, তা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে।
অনেক চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞের মতে, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের সাহায্যে ঘুমের মান উন্নত করা যায়। তবে এ বিষয়টা নিয়েও আরও বড় পরিসরে গবেষণা প্রয়োজন। তবে আপনি যে ব্যায়াম করতে পারেন, তা ৪-৭-৮ কৌশল নামে পরিচিত। অনেকটা ফুটবলের ফর্মেশনের মতো শোনালেও এ কৌশল আপনার ঘুম উন্নত করতে পারে। এ কিৗশল অনুযায়ী, প্রথমে ৪ সেকেন্ড শ্বাস নেবেন, তারপর ৭ সেকেন্ড শ্বাস বন্ধ করে রাখবেন। সবশেষে ৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে নিশ্বাস ছাড়বেন মুখ দিয়ে। এ পদ্ধতিতে অনেকের ঘুমের মান ও ঘুমের চক্র উন্ন হয়েছে। আপনিও চেষ্ট করে দেখতে পারেন।
ঘরের লাইট বন্ধ করুন?
অনেকে রাতে লাই বনধ করে ঘুমাতে পারেন না। কেউ কেউ ভয় পান বলে লাইট জ্বালিয়ে রাখেন। তবে এতে ঘুমের সমস্যা হয়। স্মার্টফোনের স্ক্রিনের মতো উজ্জ্বল আলোও শরীরের মেলাটোনিন উৎপাদন কমিয়ে দেয়। তাই লাইট বন্ধ করে আরামে ঘুমান।
গান বা প্রাকৃতিক শব্দ শুনতে পারেন?
বিষয়টা অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য লাগতে পারে। তবে এ পদ্ধতি সত্যিই কাজ করে। অনেক রাতেই আমি ইউটিউবে বৃষ্টির শব্দ চালিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছি। আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী রিলাক্সিং যেকোনো শব্দ শুনতে পারেন। শুনতে পারেন আপনার পছন্দের গল্পও।
শেষ কথা?
বাংলাদেশের অনেক মানুষের রাতে ভূত এফএম শুনতে শুনতে ঘুমানোর অভ্যাস আছে। এখন সময় বদলেছে। যেডকোন ধরনো গল্প আপনি শুনতে পারেন। এখনো আমি রাতে গল্প চালিয়ে ঘুমিয়ে যাই। হয়তো অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আপনিও এটা চেষ্ঠা করে দেখতে পারেন। তবে গল্প শুনে ঘুমানো ক্ষতিকর কি না এ ব্যিাপাপরে এখনো কোনো গবেষণা হয়নি। যদিও গবেষকরা রিলাপক্সিং মিউজিক শুনে ঘুমানেরা পরামর্শ দেন।
0 Comments